শ্রম সংস্কার কমিশনের সভায় শ্রম আইন ও নীতি কাঠামো, সংগঠনের অধিকার এবং এলডিসি গ্রাজুয়েশন-পরবর্তী চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। আইন ও নীতি কাঠামোর ক্ষেত্রে, আইএলও-র ১০টি মৌলিক কনভেনশন বাস্তবায়ন ও বিদ্যমান ঘাটতি পূরণের ওপর জোর দেওয়া হয়। জাতীয় কর্মপরিকল্পনা (NAP 2021-2026) এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন-বাংলাদেশ শ্রমখাত সংস্কার সংলাপের সুপারিশসমূহ কার্যকর করার প্রস্তাব উত্থাপন করা হয়। এছাড়াও, বাংলাদেশ শ্রম আইন, ২০০৬ এবং বাংলাদেশ ইপিজেড শ্রম আইন, ২০১৯-কে আন্তর্জাতিক মানদণ্ডের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ করার আহ্বান জানানো হয়। ইউনিয়ন গঠনের জন্য সদস্যসংখ্যার হার কমানো, ধর্মঘটের জরিমানা সংশোধন, এবং অনৈতিক শ্রমচর্চার মামলা সরাসরি দাখিলের সুযোগ প্রদানসহ বিভিন্ন সংস্কারের প্রস্তাব দেওয়া হয়। সংগঠনের অধিকার, যৌথ দরকষাকষি এবং সামাজিক সংলাপের ক্ষেত্রে, কর্মক্ষেত্রে আঘাতেজনিত সুরক্ষা প্রকল্প (EIS) এবং টেক্সটাইল ও লেদার খাতের শ্রমিকদের জন্য সামাজিক সুরক্ষা প্রকল্প চালুর বিষয়ে আলোচনা হয়। শিশুশ্রম নির্মূলের জন্য সরকারের ২০২৫ সালের প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ এবং নাগরিক সমাজের সহযোগিতা বাড়ানোর ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়। ত্রিপক্ষীয় পরামর্শ পরিষদ (TCC) এবং তৈরি পোশাক ত্রিপক্ষীয় পরামর্শ পরিষদ (RMGTCC) সংস্কারের কাজ দ্রুত শেষ করার সুপারিশ করা হয়। এলডিসি গ্রাজুয়েশনের ফলে সৃষ্ট চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায়, কর্মসংস্থান সৃষ্টি, শোভন কাজের সুযোগ এবং ক্রেতাদের অংশগ্রহণে ন্যায্য মজুরি নিশ্চিত করার বিষয়টি গুরুত্ব পায়। একইসঙ্গে, ইউনিয়ন প্রতিনিধিত্ব ও শিল্প সম্পর্কের ভারসাম্য রক্ষার আহ্বান জানানো হয়। এই সভার মাধ্যমে শ্রম খাতের ন্যায়সংগত উন্নয়ন এবং কর্মীদের সুরক্ষা নিশ্চিত করার জন্য বাস্তবমুখী কর্মপরিকল্পনা গ্রহণের উদ্যোগ নেওয়া হয়।